নবজাতক শিশুর চুল কাটা বা চুল ফেলা (মুন্ডন) নিয়ে শরীয়ত এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি

 



নবজাতক শিশুর চুল কাটা বা চুল ফেলা (মুন্ডন) নিয়ে দুটি দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। একটি হলো আমাদের ইসলামী শরীয়ত এর দৃষ্টিভঙ্গি এবং অন্যটি হলো চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি। আমাদের প্রচলিত ধারণার বাইরে এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। 

---

🔬 চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি

চিকিৎসা বিজ্ঞানে নবজাতকের চুল কাটার নির্দিষ্ট কোনও বাধ্যবাধকতা নেই, তবে কিছু সাধারণ দিক বিবেচনা করা হয়:


1. সচরাচর ১ মাসের পর চুল কাটা নিরাপদ: জন্মের সময় শিশুর মাথার খুলির হাড় (fontanelles) সম্পূর্ণ গঠিত থাকে না। তাই খুব ছোট বয়সে মাথার চুল কাটতে গেলে সাবধানতা অবলম্বন জরুরি।


2. স্বাস্থ্যগত উপকারিতা নেই বা ক্ষতিও নেই: চুল কাটলে মাথার চুল ঘন হয়—এমন ধারণার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। চুলের ঘনত্ব নির্ভর করে জিনগত (genetic) বিষয়ের উপর।


3. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্ক্যাল্পের যত্ন: জন্মের সময় শিশুর মাথায় "vernix caseosa" বা একধরনের সাদা আবরণ থাকতে পারে। চুল কেটে দিলে কিছু অভিভাবক মনে করেন এটি পরিষ্কার রাখা সহজ হয়, যদিও চুল না কেটেও পরিচর্যা সম্ভব।

---

🕌 ইসলাম ধর্মের দৃষ্টিভঙ্গি

ইসলামে নবজাতকের চুল কাটার বিষয়ে বেশ স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে:


1. সুন্নত হল সপ্তম দিনে চুল কাটা:

নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন:


> "প্রত্যেক শিশু জন্মায় আকীকার উপর। সপ্তম দিনে তার পক্ষ থেকে পশু জবাই করা হয়, চুল মুণ্ডানো হয় ও নাম রাখা হয়।"

— (আবু দাউদ, হাদীস: ২৮৩৭)


2. চুল মুণ্ডিয়ে রূপার ওজন দান করা:

নবজাতকের চুল মাপিয়ে তার সমপরিমাণ রূপা দান করাও মুস্তাহাব আমল (ইচ্ছাকৃত ভালো কাজ)। এটি দানের একটি উত্তম রূপ।


3. চুল কাটা হয় ধর্মীয় পরিচ্ছন্নতার অংশ হিসেবে এবং এটি একটি পূণ্যকর্ম হিসেবে বিবেচিত।

------

🔔 বিশেষ পরামর্শ:


শিশুর মাথায় ফোঁটা বা ড্যামেজের ঝুঁকি থাকলে খুব সাবধানে বা দেরিতে চুল কাটা উচিত।


যদি ইসলামিক নিয়মে চুল কাটেন, তবে একজন নিরাপদ অভিজ্ঞ ব্যক্তির মাধ্যমে তা করানো উত্তম।


No comments

Powered by Blogger.