ইসলামে মদ নিষিদ্ধ হয় যে ভাবে
ইসলামে মদ নিষিদ্ধ হয় যে ভাবে
ইসলামে একেবারেই নিষিদ্ধ বা হারাম কাজ গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে মদ পান করা। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো এই মদ পান করাও ইসলামে এক সময় বৈধ ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা মদকে হারাম করে দেন। কিন্তু সকল জ্ঞানের অধিকারী আল্লাহ তা‘আলা মদকে হঠাৎ করেই নিষিদ্ধ করেননি। এই মদকে আল্লাহ তাআলা কয়েক ধাপে নিষেধ করেছেন।
প্রথমে আল্লাহ পাক মদের ক্ষতির কথা বর্ণনা করেছেন। মদ পান করলে কি ধরনের ক্ষতি হয়ে থাকে সেটি আগে বুঝিয়ে দিয়েছেন। এরপর আল্লাহ পাক নেশাগ্রস্থ অবস্থায় নামাযে আসতে নিষেধ করেছেন। কেননা কেউ নেশাগ্রস্থ অবস্থায় নামায পড়লে কিরাআতে ভুল হতে পারে, রুকু সেজদায় ভুল হতে পারে। এই ভাবে কয়েক ধাপের পর এক পর্যায়ে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করলেন,
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنْصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
হে মু‘মিনগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, মূর্তি এবং লটারির তীর, এসব কিছু গর্হিত বিষয় শয়তানী কাজ ছাড়া আর কিছুই না; সুতরাং তোমরা তা বর্জন করো, যাতে তোমরা সফলতা অর্জন করতে পারো।
কিন্তু প্রকৃতভাবে যদি হঠাৎ করেই এক দিন মদ নিষিদ্ধ করতো তাহলে আমল করা কষ্টকর হত। এই জন্যই মানসিক ভাবে তৈরি করার পর আল্লাহ তা‘আলা মদ হারাম করলেন। তখন আমল করতে বিন্দুমাত্রও দেরি হয়নি।
সবাই সানন্দে গ্রহণ করেছেন। সমস্ত আম্বিয়ায়ে কেরামগন প্রথমেই তাদের উম্মতদেরকে মানসিক ভাবে প্রস্তুত করেছেন। তখন উম্মতের নামায-রোযা সহ অন্যান্য সকল আমল পালন করতে আর কোন সমস্যা হয়নি।
এই আয়াত নাযিল হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক জনকে মদীনার অলিতে গলিতে আয়াতটি পাঠ করে শুনিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। আয়াত শোনার সাথে সাথে যারা মদ পান করছিলো, গলায় আঙ্গুল দিয়ে বমি করে ফেললো। যাদের ঘরে মদ ছিলো তারা পাত্র ভেঙ্গে ফেললো। ব্যবসায়ীরা মদের মশক গুলো (চামড়ার পাত্র যেগুলোতে মদ ছিলো) চাকু দিয়ে কেটে দিলো। ফলে রাস্তা ঘাট মদের বন্যায় ভেসে গেলো। মানসিক ভাবে তৈরি হওয়ার কারণে এমন অভূতপূর্ব দৃশ্য সৃষ্টি হয়েছিলো।
কিন্তু দেখা যাবে বিভিন্ন হাদীসের কিতাব সমূহে সাহাবায়ে কেরামের মদ পান করার ঘটনাও বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু সে বর্ণনাগুলো কেবল হাদীস, কিংবা শুধু ঘটনা প্রবাহ। সুন্নাত তথা উম্মতের জন্য আমলযোগ্য নয় কিছুই নয়। বরংচ এর আমলযোগ্য বিধান হলো এ ব্যাপারে সর্বশেষ হুকুম তথা মদ হারাম।
অতএব মদ পান করা কিছুতেই যাবে না। আজকাল মদ পান করা খুবই সাভাবিক ব্যাপারে পরিনত হচ্ছে। যুবসমাজ ধংসের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে। তাই সময় থাকতে সবাইকে সাবধান হতে হবে। আল্লাহর ভয় অন্তরে আনতে হবে
No comments