শবে বারা‘আত। অতি উত্তম রাত

শবে বারা‘আত। অতি উত্তম রাত

Shabe bara'at.


লাইলাতুল বারা‘আতের ফযীলত নির্ভরযোগ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত আছে। সম্মিলিত কোন রূপ না দিয়ে এবং এই রাত উদযাপনের বিশেষ কোন পন্থা উদ্ভাবন না করে শক্তি ও সামর্থ্য অনুযায়ী বেশী বেশী ইবাদত করা এবং এই রাতে বেশি বেশি নফল ইবাদত করা নির্ভরযোগ্য রেওয়ায়েত দ্বারা প্রমাণিত। 
কিন্তু আমাদের তথাকথিত ইসলামিক সমাজে অনেক কিছুই হয়ে আসছে যা প্রকৃতপক্ষে উচিত নয়। 

আজকে লাইলাতুল বারা‘আতের ফযীলত ও করণীয় বর্জনীয় বিষয়ের কিছু হাদীস যথাযথ উদ্ধৃতিসহ উল্লেখ করা হবে। 

|●| প্রথম হাদীস শরিফ
হযরত মু‘আয ইবনে জাবাল রাযি. বলেন. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন আল্লাহ তা‘আলা ১৫ই শা‘বানের রাতে সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন। 
সহীহ ইবনে হিব্বান-৫৬৬৫, সিলসিলাতুল আহাদীছিস সহীহাহ-৩/৩১৫

|●| দ্বিতীয় হাদীস শরিফ
একদা হযরত আয়েশা রাযি. হুযুর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে না পেয়ে খুঁজতে বের হলেন। তাকে জান্নাতুল বাকীতে পেলেন- তখন হুযুর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন ১৪ই শা‘বান দিবাগত রাতে আল্লাহ তা‘আলা প্রথম আকাশে অবতরণ করেন এবং ‘বনূ কালব’ গোত্রের পালিত ছাগল পালের শরীরের পশমের চেয়েও অধিক সংখ্যক বান্দাকে তিনি ক্ষমা করে দেন। 
তিরমিযী শরীফ-হাঃ নং ৭৩৯, ইবনে মাযাহ- হাঃ নং ১৩৮৫

|●| তৃতীয় হাদীস শরিফ
হযরত আ‘লা ইবনুল হারেস থেকে বর্ণিত, হযরত আয়েশা রাযি. বলেন, রাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাযে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সিজদা করেন যে, আমার ধারণা হলো তিনি হয়তো মৃত্যুবরণ করেছেন, আমি তখন উঠে তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলী নাড়া দিলাম, তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলী নড়ল। যখন তিনি সিজদা থেকে উঠলেন এবং নামায শেষ করলেন, তখন আমাকে লক্ষ করে বললেন, হে আয়েশা/হুমাইরা! তোমার কি এ আশংকা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসূল তোমার হক নষ্ট করবেন? 

আমি উত্তরে বললাম, না; ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনার দীর্ঘ সিজদা থেকে আমার আশংকা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা? নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন. তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম. আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। রাসূল তখন ইরশাদ করলেন, এটা অর্ধ শা‘বানের রাত। আল্লাহ তা‘আলা এ রাতে বান্দার প্রতি মনোযোগ দেন এবং ক্ষমাপ্রার্থীদের ক্ষমা করেন ও অনুগ্রহপ্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই।
শু‘আবুল ঈমান-হাদীস নং- ৩৬৩৫

|●| শবে বারা‘আতে করণীয় আমল সমূহ
বেশী বেশী নফল ইবাদত, যেমন- কুরআন তিলাওয়াত, যে কোন সূরা দিয়ে নফল নামায, যিকির আযকার, দু‘আ ইস্তিগফার। উক্ত ইবাদাতসমূহ সমবেত ভাবে নয় বরং একাকী করতে হবে। উল্লেখ্য উক্ত রাতে কোন ধরা বান্ধা নিয়মে নফল নামায পড়া হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। 

উল্লেখ্য লাইলাতুল বারা‘আতের পরদিন রোযা রাখা নফল ইবাদত, কেউ শা‘বানের ১৩,১৪,১৫ তারিখে রোযা রাখতে পারলে উত্তম।

|●| শবে বারা‘আতে বর্জনীয় কাজ সমূহ
আতশবাজী, হালুয়া রুটি, শিরণী-তাবাররুক, মাইকে কুরআন তিলাওয়াত ও শবীনা, আলোকসজ্জা করা, মসজিদে বা বাড়ীতে জমায়েত হয়ে বড় আওয়াজে প্রচলিত মীলাদ-কিয়াম করা, গোরস্থানে যাওয়া, মেলা বসানো, জামা‘আতের সাথে সালাতুত তাসবীহ বা তাহাজ্জুদের নামায পড়া ইত্যাদি।

No comments

Powered by Blogger.