কুরআন-সুন্নাহর উপর আমল করার সঠিক পদ্ধতি

কুরআন-সুন্নাহর উপর আমল করার সঠিক পদ্ধতি 

Islamic act


বর্তমানে অনেকেই সুন্নাহর উপর চলার দাবি করেন কিন্তু সঠিক পদ্ধতি না জানার কারণে নিজেরাও ভ্রান্ত হচ্ছেন, অন্যকেও ভ্রান্ত করছেন। তাই প্রথমে সুন্নাহর সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান লাভ করতে হবে, তারপর মেনে চলতে হবে। কেননা বর্তমানে ইসলাম ধর্মের সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করছে ঐ সমস্ত লোকজন, যারা ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখেন না কিন্তু মানার চেষ্টা করেন। তাই বলা হচ্ছে, ধর্ম মানার আগে জানা খুবই জরুরী।

 

এ বিষয়ে প্রথম নিবেদন হলো, দীন-ইসলামের বিধান একদিনে পূর্ণতা লাভ করেনি; বরং তা দীর্ঘ তেইশ বছরে পূর্ণতা এবং সার্বজনীনতা লাভ করেছে। একেকটি বিধান পর্যায়ক্রমে একাধিকবার নাযিল হয়ে পূর্ণতা লাভ করেছে। উম্মতের জন্য আমলযোগ্য হলো কুরআন-সুন্নাহর সর্বশেষ হুকুম। আর আমলযোগ্য সেইসব সর্বশেষ হুকুমকেই ‘সুন্নাহ’ বলা হয়ে থাকে। শুরুর যামানার বিধানগুলো- যা পরবর্তী সময়ে রহিত হয়ে গেছে, সেই সমস্ত বিধান গুলো ‘হাদীস’ হলেও তা সুন্নাহ তথা আমলযোগ্য নয়। 


হাদীস শরিফের  বিভিন্ন কিতাবে নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের তেইশ বছরের যিন্দেগীর সকল ঘটনা বিদ্যমান রয়েছে। সুন্নাহ তথা সর্বশেষ নাযিলকৃত বিধি-বিধান যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে রহিত হয়ে যাওয়া প্রাথমিক যুগের বিভিন্ন ‘হাদীস’। বিজ্ঞ আলেমগন ব্যতীত সাধারণ মানুষের পক্ষে সুন্নাহ ও হাদীসের মাঝে পার্থক্য করা সম্ভব নয়। এ কারণেই কেউ যদি শুধু অনুবাদ নির্ভর হয়ে আমল করতে চায়, নিঃসন্দেহে ভ্রান্তির সম্মুখীন হতে  হবে তাকে। কেননা শুধু অনুবাদ আমলযোগ্য বিধান নয়। 


আমাদের মধ্যে অনেকেই জুমু‘আর দিন মসজিদে এসে খুতবা চলা অবস্থায় নামায পড়া আরম্ভ করে। কিন্তু মাস‌আলা হলো, জুমার খুতবা চলা অবস্থায় নামাজ পড়া, কোরআন তেলাওয়াত করা, তাসবীহ পড়াসহ কোন আমল‌ই করতে পারবেন না। কিন্তু সঠিক মাস‌আলা না জেনে রাখার কারণে এমন ভুল হচ্ছে। কিন্তু যে খুতবার সময় নামায পড়ছে, তার সাভাবিক ধারণায় বলছে আমি তো নামায পড়ছি, কোনো গুনাহের কাজ তো করছিনা। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেই ব‍্যক্তি বড় গুনাহের কাজ করছে। 


কুরআন হাদীসে থাকলেই আমল করতে হবে এই চিন্তাটাই ভুল। বরং আমল করতে হবে কুরআন-হাদীসের সর্বশেষ বিধান তথা সুন্নাহর উপর। মহাগ্রন্থ আল কুরআনের একাধিক আয়াত এবং রাসূলের হাদীস আছে,  যেগুলোর হুকুম-আহকাম প্রাথমিক যামানায় থাকলেও পরবর্তীতে তা রহিত হয়ে যাওয়ায় এখন উম্মতের জন্য তা আমলযোগ্য নয়।


কুরআন-সুন্নাহর বিধানাবলী তেইশ বছরের নবুওয়্যাতী যিন্দেগীতে ধাপে ধাপে পূর্ণতা লাভ করেছে। সর্বশেষ বিদায় হজ্জে আল্লাহ তা‘আলা আয়াত নাযিল করলেন,

الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا

অর্থ: আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে এবং তোমাদের ওপর আমার নে‘আমতকে পরিপূর্ণ করে দিলাম। আর আমি একমাত্র ইসলামের ওপর রাযি হয়ে গেলাম। 

No comments

Powered by Blogger.