ফেসবুকে ব্লু টিক (Blue Tick) পাওয়ার নিয়ম ও শর্তাবলি
বর্তমানে ফেসবুকে ব্লু টিক বা ভেরিফায়েড ব্যাজ পাওয়া অনেকেরই স্বপ্ন। কারণ এই ছোট নীল চিহ্নটি কেবল একটি প্রতীক নয়, এটি আপনার পরিচয়ের সত্যতা, জনপ্রিয়তা এবং প্রভাবের প্রতীকও বটে। তবে অনেকেই ভুল ধারণা পোষণ করেন যে নির্দিষ্ট সংখ্যক ফ্রেন্ড বা ফলোয়ার থাকলেই ব্লু টিক পাওয়া যায়—আসলে বিষয়টি তেমন নয়।
🟦 ব্লু টিক বা ভেরিফায়েড ব্যাজ কী?
ফেসবুকের ব্লু টিক হলো একটি “verified” চিহ্ন, যা নামের পাশে দেখা যায়। এটি প্রমাণ করে যে ওই অ্যাকাউন্টটি আসল, অর্থাৎ কোনো জনপ্রিয় ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, মিডিয়া হাউজ বা ব্র্যান্ডের অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট।
👥 ফেসবুকে কতজন ফ্রেন্ড বা ফলোয়ার থাকলে ব্লু টিক পাওয়া যায়?
ফেসবুক সরাসরি কখনও বলে না যে “এই পরিমাণ ফ্রেন্ড থাকলেই ব্লু টিক দেবে।”
তবে বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে—
সাধারণভাবে ৫,০০০ ফ্রেন্ডস বা তার বেশি থাকলেও তা ব্লু টিকের নিশ্চয়তা দেয় না।
বরং ফলোয়ার সংখ্যা, জনপ্রিয়তা, মিডিয়া কাভারেজ এবং পরিচয় নিশ্চিত করার নথি—এসব বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ফলোয়ার সংখ্যা যদি ২০,০০০ বা তার বেশি হয়, এবং আপনি পাবলিক ফিগার, সাংবাদিক, লেখক, শিল্পী বা ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে সক্রিয় থাকেন, তাহলে ভেরিফিকেশন পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বাড়ে।
📜 ফেসবুক ব্লু টিক পাওয়ার পদ্ধতি
ফেসবুক এখন “Meta Verified” নামের একটি সিস্টেম চালু করেছে, যার মাধ্যমে আপনি নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করে সাবস্ক্রিপশন নিলে ব্লু টিক পেতে পারেন।
এটি দুটি উপায়ে পাওয়া যায় 👇.
১️⃣ Meta Verified সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে (Paid Method):
এটি বর্তমানে অনেক দেশে চালু, বাংলাদেশেও ধীরে ধীরে চালু হচ্ছে।
এখানে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি (প্রায় $12–$15) প্রদান করতে হয়।
এরপর সরকারি পরিচয়পত্র (NID/Passport) দিয়ে যাচাই করতে হয়।
যাচাই সম্পন্ন হলে আপনার নামের পাশে ব্লু টিক দেখা যাবে।
২️⃣ অর্গানিক বা ফ্রি ভেরিফিকেশন (Free Method):
যদি আপনি একজন পরিচিত ব্যক্তিত্ব বা জনপ্রিয় পেজের মালিক হন, তবে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে আবেদন করতে পারেন—
ফেসবুকের “Verification Request Form” এ যান:
👉 https://www.facebook.com/help/contact/342509036134712
আপনার অ্যাকাউন্ট বা পেজের লিংক দিন।
আপনার পরিচয়পত্র (NID, Passport) আপলোড করুন।
প্রমাণ দিন যে আপনি একজন পাবলিক ফিগার — যেমন নিউজ কাভারেজ, অফিশিয়াল ওয়েবসাইট, মিডিয়া রিপোর্ট ইত্যাদি।
আবেদন সাবমিট করুন এবং ফেসবুকের রিভিউ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
📈 ভেরিফিকেশন পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়াতে যা করবেন
নিজের নাম, প্রোফাইল ছবি ও কভার ফটো স্পষ্টভাবে দিন।
“About” সেকশন সম্পূর্ণভাবে পূরণ করুন।
নিয়মিত পোস্ট করুন, বিশেষ করে মূল ও প্রাসঙ্গিক কনটেন্ট।
নিজের নামে অন্য ভুয়া প্রোফাইল রিপোর্ট করুন যেন বিভ্রান্তি না হয়।
আপনার নাম মিডিয়া বা সংবাদপত্রে উল্লেখ থাকলে, সেই লিংক ফেসবুকের ফর্মে যুক্ত করুন।
🚫 যেসব কারণে ভেরিফিকেশন বাতিল হয়
• ভুয়া নাম বা তথ্য ব্যবহার করলে
• ফেক ফলোয়ার বা বট ব্যবহার করলে
• ফেসবুকের নীতিমালা লঙ্ঘন করলে
• অ্যাকাউন্টে নিরাপত্তা সমস্যা থাকলে (যেমন: দুই ধাপ যাচাই চালু না থাকলে)
✅ উপসংহার
ফেসবুকের ব্লু টিক শুধু স্ট্যাটাস বা জনপ্রিয়তার প্রতীক নয়—এটি বিশ্বাসযোগ্যতা ও পেশাগত মর্যাদার প্রতিফলন।
তাই নির্দিষ্ট সংখ্যক ফ্রেন্ড নয়, বরং বিশ্বস্ত পরিচয়, নিয়মিত সক্রিয়তা ও নীতিমালা মেনে চলাই ব্লু টিক পাওয়ার মূল চাবিকাঠি।


No comments