ওযু ছাড়া কুরআন শরীফ ধরার বিষয়ে ইসলামি শরিয়তের বিধান




ওযু ছাড়া কুরআন শরীফ ধরার বিষয়ে ইসলামি শরিয়তে বেশ সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা আছে। মূলত:কুরআনের মূল কপি (মুসহাফ) ধরতে চাইলে ওযু থাকা জরুরি।


মুসলমানদের জন্য বিধান:


অধিকাংশ ইসলামি ফিকহ মতে (হানাফি, মালিকি, শাফি ও হাম্বলি), ওযু ছাড়া কুরআন শরীফ (মূল আরবি লেখা) ছোঁয়া জায়েয নয়।


এর ভিত্তি হলো কুরআনের আয়াত:

"لَا يَمَسُّهُ إِلَّا الْمُطَهَّرُونَ"

অর্থ: “তাতে (কুরআনে) স্পর্শ করে না কেউ, শুধুমাত্র পবিত্র লোক ছাড়া।” – (সূরা ওয়াকিয়া: ৭৯)



তাফসীর, অনুবাদ বা মোবাইল অ্যাপে পড়ার ক্ষেত্রে:


কুরআনের অনুবাদ বা তাফসীর বই (যেখানে কুরআনের মূল আরবি সম্পূর্ণ নেই বা মিশ্র আছে) ছোঁয়া জায়েয – তবে ওযু থাকলে তা উত্তম।


মোবাইল বা ট্যাব ইত্যাদিতে কুরআন অ্যাপ ব্যবহার করলে, সরাসরি "মুসহাফ" ছোঁয়া হয় না বলেই বিবেচনা করা হয়। তবে এখানেও ওযু থাকা শ্রেয়।


অনুবাদ, তাফসীর বা মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারে কিছুটা শিথিলতা আছে, তবে ওযু থাকলে তা অধিক ফজিলতের কাজ।



গিলাফসহ কুরআন ধরার বিষয়ে ফিকহবিদদের মধ্যে মতভেদ আছে, তবে মূলত নিচের বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য:


১. হানাফি মাজহাব অনুযায়ী:


গিলাফ বা কাভারের ওপর থেকে কুরআন ধরলে—যদি গিলাফ কুরআনের সঙ্গে সংযুক্ত না হয় (অর্থাৎ আলাদা থাকে), তাহলে ওযু ছাড়াও ধরা জায়েয।


কিন্তু যদি গিলাফটি এমন হয় যে, তা কুরআনের স্থায়ী অংশ (যেমন বাঁধাই করা কাভার) — তাহলে ওযু ছাড়া ধরা জায়েয নয়।



২. শাফি ও অন্যান্য মাজহাব অনুযায়ী:


তারা সাধারণভাবে আরও সতর্ক। অনেক শাফি ও মালিকি আলেম বলেন, যেকোনো অবস্থায় মূল কুরআনের সংস্পর্শ এড়ানো উচিত ওযু ছাড়া, এমনকি গিলাফ থাকলেও।



উপসংহার:


যদি গিলাফ আলাদা হয় (যেমন: কাপড় বা কাভার), তাহলে ওযু ছাড়া ধরা অনুমোদিত—বিশেষ করে জরুরি প্রয়োজনে।


তবে ওযু করে ধরা উত্তম এবং শ্রেয়, কারণ এটি কুরআনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন।




No comments

Powered by Blogger.