ব্যাকরণ কাকে বলে? ব্যাকরণের প্রকারভেদ ও ব্যাকরণের প্রয়োজনীয়তা
ব্যাকরণ হল ভাষার শুদ্ধ ও শৃঙ্খল ব্যবহার সম্পর্কে নিয়মাবলি। এটি ভাষার গঠন, শব্দের প্রকৃতি, বাক্যের গঠন ও বিশ্লেষণের নীতিগুলো ব্যাখ্যা করে। সহজভাবে বলতে গেলে, ব্যাকরণ হল ভাষার নিয়মকানুন যা ভাষাকে সঠিক ও সুন্দরভাবে ব্যবহারের পথ দেখায়।
ব্যাকরণের প্রকারভেদ
ব্যাকরণ সাধারণত পাঁচ প্রকারের
হয়ে থাকে—
১. শব্দতত্ত্ব (নিরুক্তি বা শব্দবিদ্যা) – শব্দের উৎপত্তি, গঠন ও অর্থের পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করে।
২. রূপতত্ত্ব (মর্ফোলজি) – শব্দের গঠন, প্রকৃতি, বিভক্তি, ক্রিয়ার কাল ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে।
3. সন্ধিতত্ত্ব – দুই বা ততোধিক ধ্বনির মিলনের ফলে যে পরিবর্তন ঘটে, তা বিশ্লেষণ করে।
৪. বাক্যতত্ত্ব (সিনট্যাক্স) – বাক্যের গঠন ও উপাদানসমূহের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে।
৫. ছন্দতত্ত্ব – কবিতা বা ছন্দবদ্ধ রচনায় মাত্রা, তান, অন্ত্যমিল ও লয় ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে।
এছাড়া, ভাষাতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাকরণকে বর্ণতত্ত্ব, ধ্বনিতত্ত্ব, সমাসতত্ত্ব প্রভৃতি শাখাতেও ভাগ করা হয়।
ব্যাকরণের প্রয়োজনীয়তা
ব্যাকরণ ভাষাকে শৃঙ্খলিত ও সুসংগঠিত রাখে, যার ফলে ভাষার সঠিক প্রয়োগ সম্ভব হয়। এর প্রয়োজনীয়তা নিচে দেওয়া হলো—
1. ভাষার শুদ্ধতা রক্ষা – ব্যাকরণের নিয়ম অনুসরণ করলে ভাষার ভুল ব্যবহার রোধ হয় এবং সঠিক উচ্চারণ ও লিখনরীতি শেখা যায়।
2. সুন্দর ও পরিষ্কারভাবে মনের ভাব প্রকাশ – ব্যাকরণ জানা থাকলে চিন্তা-ভাবনা গুছিয়ে স্পষ্ট ও যথাযথভাবে প্রকাশ করা যায়।
3. যোগাযোগ সহজ ও কার্যকর করা – শুদ্ধ ও সুশৃঙ্খল ভাষা ব্যবহারের ফলে অন্যদের সঙ্গে সহজে বোঝাপড়া করা যায়।
4. বাক্যের গঠন ও অর্থের বিশ্লেষণ – বাক্যের শুদ্ধ গঠন ও অর্থের পরিবর্তন বোঝার জন্য ব্যাকরণ গুরুত্বপূর্ণ।
5. সাহিত্যচর্চায় সহায়তা – সাহিত্য রচনায় ব্যাকরণের জ্ঞান লেখার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
6. ভাষার বিকাশ ও সংরক্ষণ – ব্যাকরণ ভাষাকে পরিবর্তন, বিকাশ ও সংরক্ষণ করতে সাহায্য করে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও তা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে।
7. ভিন্ন ভাষা শেখার ভিত্তি – অন্য ভাষা শেখার সময়ও ব্যাকরণের নিয়ম জানা থাকলে তা দ্রুত আয়ত্ত করা যায়।
সুতরাং, ভাষার শুদ্ধ ও যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে ব্যাকরণের গুরুত্ব অপরিসীম।
No comments