রোযার সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু নেক আমল
রোযার সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু নেক আমল
রোযা নিঃসন্দেহে একটি নেক আমল, কিন্তু এর সাথে সাথে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদেরকে আরও বেশি নেক আমল অর্জন করার জন্য অনেক সুযোগ করে দিয়েছেন। রমযান মাসে অনেক অনেক নেক আমল করার সুযোগ আছে। যার মাধ্যমে গুণাহগার মানুষ গুলো মুক্তি পেতে পারেন, এবং নেককার মানুষ গুলো আরও উচ্চ মর্যাদা লাভ করতে পারেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে এই রমযান মাস কাজে লাগানোর তৌফিক দান করুন, আমিন !
|◆| রোযার নিয়্যাত করা
রাতেই রোযার নিয়্যাত করতে হবে। সুনান আন-নাসাঈ গ্রন্থে বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত হয়েছে যে,
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
«مَنْ لَمْ يُبَيِّتِ الصِّيَامَ مِنَ اللَّيْلِ قَبْلَ الْفَجْرفَلاَ صِيَامَ لَه»
‘‘যে ব্যক্তি ফজর উদয়ের পূর্বে, রাতেই রোযার নিয়্যাত করেনা, তার রোযা হবে না।’’ (সুনান আন-নাসাঈ, হাদীস নং ২৩৩২)
|◆| দেরী করে সেহেরী খাওয়া
সেহেরী খাওয়া একটি বরকতময় বৈশিষ্ট্য যা আল্লাহ এ উম্মাতকে দান করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
«فَصْلُ مَا بَيْنَ صِيَامِنَا وَصِيَامِ أَهْلِ الْكِتَابِ أَكْلَةُ السَّحَر»
‘‘আমাদের রোযা ও আহলে কিতাবের (ইহুদী খ্রিস্টানসহ যে সকল ধর্মের অনুসারীদের উপর আল্লাহর কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে,) রোযার মধ্যে পার্থক্য হলো সেহেরী খাওয়া।’’ (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬০৪)
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু যায়েদ বিন সাবেত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন,
«تَسَحَّرْنَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ قَامَ إِلَى الصَّلَاةِ قُلْتُ كَمْ كَانَ بَيْنَ الْأَذَانِ وَالسَّحُورِ قَالَ قَدْرُ خَمْسِينَ آيَةً»
‘‘আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সেহেরী খেয়েছি। অত:পর তিনি নামাযে দাঁড়ালেন।’’ আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু তখন জিজ্ঞাসা করলেন, আযান ও সেহেরীর মধ্যে কতটুকু সময়ের পার্থক্য ছিল? যায়েদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘‘পঞ্চাশটি আয়াত পরিমাণ।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮২১ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬০৬ )
|◆| তাড়াতাড়ি ইফতার করা
সূর্য অস্ত যাওয়া নিশ্চিত হলে তাড়াতাড়ি ইফতার করা রোযাদারের জন্য মুস্তাহাব। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
«لَا يَزَالُ النَّاسُ بِخَيْرٍ مَا عَجَّلُوا الْفِطْرَ»
‘‘মানুষ ততক্ষণ পর্যন্ত কল্যাণের উপর থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা অনতিবিলম্বে ইফতার করবে।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৫৬ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬০৮)
|◆| কি দিয়ে ইফতার করবে
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
«كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يُفْطِرُ عَلَى رُطَبَاتٍ قَبْلَ أَنْ يُصَلِّىَ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ رُطَبَاتٌ فَعَلَى تَمَرَاتٍ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ حَسَا حَسَوَاتٍ مِنْ مَاءٍ»
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘রুতাব’ (শুকনা নয় এমন) খেজুর দিয়ে নামাযের আগে ইফতার করতেন, রুতাব পাওয়া না গেলে শুকনা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তাও পাওয়া না গেলে তিনি কয়েক ঢোক পানি পানে ইফতার করতেন।’’ (উত্তম সনদে ইমাম আহমাদ, হাদীস নং ১২৬৭৬ ও আবু দাউদ, হাদীস নং ২৩৫৬)
|◆| রোযাদারকে ইফতার করানো
সহীহ সনদে তিরমিযী ও আহমাদ বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
«مَنْ فَطَّرَ صَائِمًا كُتِبَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ إِلَّا أَنَّهُ لَا يَنْقُصُ مِنْ أَجْرِ الصَّائِمِ شَيْء»
‘‘যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে ইফতার করায়, সে উক্ত রোযাদারের সাওয়াবের কোনরূপ ঘাটিত না করেই তার সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে।’’ (সুনান তিরমিযী, হাদীস নং ৮০৭ ও মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ১৭০৩৩)
No comments