মি’রাজের রাত্রে আল্লাহ উম্মতকে তিনটি জিনিস হাদিয়া দিয়েছিলেন

মি’রাজের রাত্রে আল্লাহ উম্মতকে তিনটি জিনিস হাদিয়া দিয়েছিলেন

Islamic story and history


৬২০ খ্রিস্টাব্দে রজব মাসের ২৬ তারিখ রাতে হজরত রাসুলুল্লাহ সা. আল্লাহ তায়ালার বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কাবা শরিফ থেকে বায়তুল মোকাদ্দাস গমন করেন। সেখানে উপস্থিত নবীদের নামাজের ইমামতি করে তিনি ঊর্ধ্বলোকে গমন করেন এবং সিদরাতুল মুনতাহায় উপস্থিত হন। সেখান থেকে বোরাকে ছড়ে আরশে আজিমে গিয়ে আল্লাহ তায়ালার সাক্ষাৎ লাভ করেন। 

এই রাতে আল্লাহর নিকট হতে বেশ কিছু উপহার পেয়েছেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং জান্নাত, জাহান্নামসহ সৃষ্টিজগতের সবকিছুর রহস্য প্রত্যক্ষ করেন। তার মধ্যে তিনটি উপহার বিশেষ ভাবে উল্লেখ আছে এবং তিনটি উপহার‌ই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
● পাঁচওয়াক্ত নামাজ
● সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত
● আল্লাহর সঙ্গে শিরক না করলে অন্যান্য গোনাহ মাফ হওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কিত ঘোষণা।

|★| প্রথম হাদিয়া
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায 

নামায প্রথমে দুই ওয়াক্ত ছিলো। মি’রাজের রাতে আল্লাহ তা‘আলা পঞ্চাশ ওয়াক্ত করে দিলেন। ফেরার পথে হযরত মূসা আ. এর অনুরোধে নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফরিয়াদ করায় আল্লাহ তা‘আলা কমিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত বাকী রাখলেন এবং ইরশাদ করলেন, আপনার দরখাস্তের প্রেক্ষিতে যদিও আমি পাঁচ ওয়াক্ত করে দিয়েছি কিন্তু এই পাঁচ ওয়াক্তের বিনিময়ে আপনার উম্মতকে পঞ্চাশ ওয়াক্তেরই সওয়াব দান করবো। 

আমার পবিত্র কালাম কখনো পরিবর্তন হয় না। مَا يُبَدَّلُ الْقَوْلُ لَدَيَّ।
মি’রাজের দ্বিতীয় হাদিয়া নামাযের এ বিধান ধাপে ধাপে পূর্ণ হয়েছে এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিধান-প্রাথমিক সময়ে জায়েয ছিলো- পরবর্তীতে তা নাজায়েয করে দেওয়া হয়েছে। 

|★| দ্বিতীয় হাদিয়া 
শিরকমুক্ত ঈমান নিয়ে কবরে আসার ওপর জান্নাতের ওয়াদা

আল্লাহ তা‘আলার নিকট শিরকযুক্ত ঈমানের কোন মূল্য নেই। শিরকের উদাহরণ হলো, মাযারে প্রার্থনা করা, সিজদা করা, মাযার তাওয়াফ করা ইত্যাদি। মাযার কেন্দ্রিক যা কিছু হয় প্রত্যেকটা ঈমান বিধ্বংসী। বর্তমানে এনজিও, খ্রিস্টান মিশনারিগুলো অনেক ভালো ভালো কাজ করছে, বাড়ি বাড়ি টয়লেট বানিয়ে দিচ্ছে। 

বিভিন্ন স্থানে হাসপাতাল বানিয়ে দিচ্ছে, টিউবওয়েল বসিয়ে দিচ্ছে ইত্যাদি। এসবের কোন বিনিময় তারা আল্লাহর কাছে পাবে না। কেননা, তাদের ঈমান নেই। ইয়াহু-দী ধর্ম খ্রিস্টধর্ম এক সময় ঠিক ছিলো। কিন্তু কালপরিক্রমায় তা সম্পূর্ণরূপে বিকৃত হয়ে গেছে। উপরন্তু কুরআন নাযিল হওয়ার পর এইসব রহিত হয়ে গেছে। মুক্তির একমাত্র পথ ইসলাম কুরআন ও সকলের প্রিয় নবীর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত।

|★| তৃতীয় হাদিয়া
সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত

সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত (২৮৫-২৮৬, আমানার রাসূলু…থেকে শেষ পর্যন্ত) তেলাওয়াত করার অনেক উপকারের কথা সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। শেষ আয়াতে অত্যন্ত জরুরি কয়েকটি দুয়া রয়েছে। এসব দুয়া কবুল হওয়ার ওয়াদাও করা হয়েছে। উভয় আয়াতেই দোয়া আছে। আল্লাহর উসিলা করে,আপনি এসব দোয়ার যে অংশই পাঠ করবেন আল্লাহ আপনাকে অবশ্যই রহমত দান করবেন, অর্থাৎ কবুল করা হবে। 

No comments

Powered by Blogger.