বাংলাদেশের সাথে যুক্ত হতে পারে ২৫ হাজার বর্গ মাইল নতুন ভুমি
25,000 square miles of new land could be added to Bangladesh
বাংলাদেশের সাথে যুক্ত হতে পারে ২৫ হাজার বর্গ মাইল নতুন ভুমি
সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে গেলে বাংলাদেশ যে একদম ডুবে যাবে ধারনাটা পুরোপুরি সঠিক নয়। সব থেকে বিস্তৃত এবং দীর্ঘ অগভীর মহী-সোপান হল বঙ্গোপসাগর জুড়ে। এর গভীরতা কোথাও ২০ মিটার আবার কোথাও ২০০ মিটার বা তার একটু বেশী এবং উপকূল থেকে প্রায় ২০০ কি.মি. এর বেশি পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রতি বছর সমুদ্রে আমাদের মহী-সোপান (সমুদ্র উপকূলের স্লোপের মত অগভীর অংশ) বাড়ছে প্রায় ১৫ মিটার করে।
বাংলাদেশ পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ। সুদূর ভুটান, নেপাল, হিমালয় থেকে নদী উৎপন্ন হয়ে পথে প্রায় ১,০০,০০,০০,০০০ (১ বিলিয়ন) মেট্রিক টন পলি বয়ে নিয়ে বঙ্গোপসাগরে ফেলছে। যার বেশিরভাগ পলি মহী-সোপান পার হয়ে গভীর সমুদ্রে হারিয়ে যায়। প্রতিবছর নদী ভাঙ্গনের মাধ্যমে প্রায় এক শত বর্গ কিমি করে জায়গা হারায়। আর ভুটান, নেপাল, ভারত থেকে বয়ে আনা পলি এর সাথে এই একশত বর্গ কিমি যুক্ত হয়ে যায়।
বছরে প্রায় ১২০ বর্গ কিমি করে জায়গা নতুনভাবে যুক্ত হচ্ছে। নিত্য নতুন দ্বীপ জেগে উঠছে বঙ্গোপসাগরে। অনেক দ্বীপ স্থায়ী কাঠামো পেয়েছে। যদি মুল নদীর প্রবাহ বাধাগ্রস্ত না করে সাতক্ষীরা উপকূল থেকে মহী-সোপানের গভীরে যেয়ে ছোট ছোট বাধ তৈরি করে (অস্থায়ীভাবে) মেঘনা পর্যন্ত নিতে পারে, তবে পানিতে থাকা পলি গভীর সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া থেকে বাঁচিয়ে নিয়ন্ত্রিত ভাবে অসংখ্য দ্বীপ তৈরি করতে পারবে।
এটা করতে পারলে প্রায় ২৫০০০ বর্গ মাইল ভূমি মুল ভূখণ্ডের সাথে যুক্ত করা সম্ভব। সাথে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রভাব মুক্ত থাকা যাবে। আর পলিযুক্ত জমি উর্বর, আর চাষের জন্য খুবই উপযুক্ত। তবে মনে রাখতে হবে মোহনার মূল প্রবাহ বাধাগ্রস্ত যেন না হয়। এর উদ্দেশ্য পলি আটকানো। তাই কোন জালের সাথে পরিত্যক্ত বোতল বেধে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে এটা করা যেতে পারে।
এতে খরচ অনেক কমবে সাথে সেডিমেন্টগুলো ফিল্টার হয়ে আটকে থাকবে। ভবিষ্যতে এই অন্তরায়ে পলি গুলো বাধাপ্রাপ্ত হয়ে জমতে শুরু করবে। স্থায়ী রূপ পাবে আস্তে আস্তে। পুরা বিষয়টা করতে হবে পরিকল্পিত ভাবে, যেন নদীগুলোর মুল প্রবাহ ঠিক থাকে। আর এক্ষেত্রে দীর্ঘ বছর ধরে আস্তে আস্তে বঙ্গোপসাগরে জমা হওয়া পলিকে নিয়ন্ত্রণ করে নতুন দ্বীপ গঠনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা যায়।
|★| এই পদ্ধতির সুবিধা সমূহ
● উপকূলে পলি জমার পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে ভূমির উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে
● সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির প্রভাবে ডুবে যাওয়ার ঝুঁকি কমবে
● বিশ্ব তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাবে পানির নিচে চলে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবে
● উর্বর পলিযুক্ত নতুন ভূমি আমাদের কৃষি জমিতে অন্তর্ভুক্ত হবে
● নতুন নতুন বনভূমি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে
● অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ সামলানো সহজ হবে
বিশ্বে অনেক দেশ রয়েছে যাদের ভূমির উচ্চতা সমুদ্র পৃষ্টের উচ্চতা থেকে বেশি নয়। নেদারল্যান্ডস এর মত দেশ ডেল্টা প্লানের মাধ্যমে তাদের দেশকে টিকিয়ে রেখেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত বিলিয়ন ডলার খরচ করে মাটি বা বালি এনে সমুদ্রে কৃত্রিম দ্বীপ করেছে। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে কৃত্রিম ভাবে মাটি বা বালি দিয়ে ভরাট করা লাগবে না। প্রাকৃতিকভাবেই এদেশের নদী গুলি প্রচুর পলি বহন করে।
No comments