নবজাতক শিশুর পায়খানা কালো বা গাঢ় রঙের হওয়া এবং অতিরিক্ত দুর্গন্ধযুক্ত হওয়ার কারণ, করণীয় এবং প্রতিকার
সম্ভাব্য কারণ
1. প্রথম দিকের স্বাভাবিক কালো পায়খানা (মেকোনিয়াম)
জন্মের পর প্রথম কয়েকদিন শিশুর পায়খানা কালচে-সবুজ বা কালো রঙের হয়।
এটাকে মেকোনিয়াম বলা হয়, যা গর্ভে থাকার সময় জমা হওয়া তরল, শ্লেষ্মা, এবং অন্যান্য পদার্থ দিয়ে তৈরি।
সাধারণত ২–৩ দিনের মধ্যে এর রঙ হালকা হয়ে হলুদ বা বাদামি হয়ে যায়।
2. মায়ের দুধ বা ফর্মুলা মিল্কের প্রভাব
কিছু ফর্মুলা দুধে লোহা (Iron) বেশি থাকে, যা পায়খানার রঙ কালচে করতে পারে।
লোহা-যুক্ত দুধ খেলে দুর্গন্ধও কিছুটা বেশি হতে পারে।
3. রক্ত মেশা পায়খানা
শিশুর পাচনতন্ত্রে রক্তক্ষরণ হলে কালো টারের মতো পায়খানা হতে পারে।
রক্ত যদি উপরের পরিপাকতন্ত্র (পেট বা অন্ত্র) থেকে আসে, তবে রঙ কালচে-কালো হয়।
এটি বিপজ্জনক এবং তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
4. সংক্রমণ (ইনফেকশন)
ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের কারণে পায়খানার রঙ গাঢ় এবং দুর্গন্ধ তীব্র হতে পারে।
এর সঙ্গে জ্বর, বমি, ও খাওয়ার অনীহা থাকতে পারে।
5. যকৃত বা পিত্ত সংক্রান্ত সমস্যা
জন্মগত লিভারের সমস্যা বা পিত্ত নিঃসরণে সমস্যা হলে রঙ অস্বাভাবিক হতে পারে।
যা করবেন
1. শিশুর বয়স ও লক্ষণ বিবেচনা করুন
জন্মের প্রথম ২–৩ দিনের মধ্যে হলে এটি সম্ভবত মেকোনিয়াম, চিন্তার কারণ নয়।
কিন্তু ৪–৫ দিন পার হওয়ার পরও কালো থাকলে সতর্ক হোন।
2. শিশুর আচরণ ও খাওয়া লক্ষ্য করুন
খাওয়া কমে যাওয়া, কান্না বেড়ে যাওয়া, জ্বর, বমি—এগুলো থাকলে জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন।
3. ডাক্তারের কাছে তৎক্ষণাৎ যান যদি
কালো পায়খানা অনেকদিন ধরে থাকে
তীব্র দুর্গন্ধের সঙ্গে রক্তের মতো কালো বা লাল দাগ থাকে
শিশুর ওজন না বাড়ে বা দুর্বল লাগে
4. দুধের ধরন যাচাই করুন
ফর্মুলা মিল্কে লোহার মাত্রা বেশি হলে ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করে পরিবর্তন করুন।
5. সংক্রমণ সন্দেহ হলে পরীক্ষা করান
ডাক্তার প্রয়োজনে স্টুল টেস্ট বা অন্যান্য পরীক্ষা করে কারণ নির্ণয় করবেন।
সতর্কতা
শিশুর পায়খানায় হঠাৎ পরিবর্তন হলে নিজে ওষুধ দেবেন না।
সবসময় শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন, কারণ নবজাতকের শরীর খুব সংবেদনশীল।
No comments