নবজাতক শিশুকে জন্মের পর কখন গোসল করানো উচিত
নবজাতক শিশুকে জন্মের পর কখন গোসল করানো উচিত—এ নিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞান এবং ইসলামী শরীয়ত উভয় দিক থেকেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা রয়েছে। নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:
---
🩺 চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে
নবজাতকের ত্বক খুবই সংবেদনশীল, এবং জন্মের সময় শরীরের উপর থাকা সাদা রঙের স্তর (vernix caseosa) তাকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। তাই চিকিৎসকরা নবজাতকের জন্মের পরপরই গোসল করাতে নিরুৎসাহিত করেন। তাদের মতে:
✅ প্রথম গোসলের সঠিক সময়:
জন্মের ২৪ ঘণ্টা পর অথবা কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা থেকে ১২ ঘণ্টা পর গোসল করানো ভালো। এতে শিশু শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে পারে এবং দুধ পান করতে সহায়তা পায়।
✅ প্রাথমিক যত্ন:
জন্মের পর পরিষ্কার, উষ্ণ কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে শিশুকে মুছে নিতে বলা হয়। বিশেষ করে মাথা ও মুখমণ্ডল।
✅ সতর্কতা:
• নবজাতক অসুস্থ বা অপরিণত (প্রিম্যাচিউর) হলে গোসল বিলম্ব করা উচিত।
• পানির তাপমাত্রা অবশ্যই কুসুম গরম (প্রায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস) হওয়া উচিত।
• হালকা সাবান ব্যবহার করতে পারেন, তবে প্রতিদিন গোসল প্রয়োজন নেই।
---
🕌 ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে:
ইসলামে নবজাতকের পরিচ্ছন্নতা ও গোসল নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, তবে কিছু সুন্নত ও নির্দেশনা আছে:
✅ প্রথম গোসল:
• নবজাতকের দেহে যদি কোনো অপবিত্রতা বা রক্ত লেগে থাকে, তাহলে তা পরিষ্কার করা উত্তম।
• গোসল করানো সুন্নত, তবে জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই নয়, বরং পরিস্থিতি অনুযায়ী।
✅ আযান ও ইকামত:
শিশুর ডান কানে আযান ও বাম কানে ইকামত দেয়া সুন্নত।
✅ আকীকা ও নাম রাখা:
• ৭ম দিনে আকীকা, মাথা মুণ্ডানো ও নাম রাখা সুন্নত।
• ঐ দিন গোসল করানো অনেক সময় করা হয়, তবে তা আবশ্যক নয়।
---
✅ উপসংহার:
নবজাতকের জন্য প্রথম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গোসল না করাই উত্তম—এটা চিকিৎসা বিজ্ঞান সমর্থন করে এবং ইসলামও এর বিরোধিতা করে না। বরং ইসলাম শিশুর মঙ্গল ও স্বস্তিকে অগ্রাধিকার দেয়।
প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলাই সর্বোত্তম।
---
সমাপ্ত
No comments